দাকোপে মাচান পদ্ধতিতে তরমুজ ও সবজি চাষে বাড়ছে কৃষকের সফলতা
আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ
কৃষি ভাণ্ডার খ্যাত দাকোপে মাচান পদ্ধতিতে তরমুজ ও সবজি চাষে ব্যাপক সফলতা মিলছে। এক সময়ের লবণাক্ততা কাটিয়ে নতুন নতুন এলাকা আসছে চাষাবাদের আওতায়।
তিনি বাজার জাত করবেন বলে আশা করছেন। এ ছাড়া বেড়িবাঁধের উপর উঁচুতে, বেগুন ও টমেটো চাষ করেছেন। গত ২ সপ্তাহ আগে থেকে তিনি সবজি বিক্রি করছেন। সমন্বিত চাষাবাদের ঘেরে তিনি গলদা, বাগদা, হরিনা, পার্শ্বে, রুই ও গ্রাসকার্প মাছের চাষ করেছেন। নিজে শ্রম দেওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন স্থায়ী শ্রমিক রেখে চাষাবাদ করছেন। সব মিলে চাষাবাদে তার খরচ হবে ২ লাখ টাকার মত। বর্তমানে তিনি আশা করছেন সেখানে সব মিলে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ ২ মাসের ব্যবধানে তিনি সেখান থেকে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা লাভবান হবেন। বর্তমানে গোটা উপজেলা জুড়ে কমবেশি সমন্বিত চাষাবাদ হচ্ছে।
খুলনার উপকূলবর্তী উপজেলা দাকোপের অর্থনীতি এক সময় ছিল লবণ পানির চিংড়ি চাষের উপর নির্ভরশীল। সময়ের ব্যবধানে সেই অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। গত ৩ দশক ধরে গরমের তরমুজ চাষে ব্যাপক সফলতা মিলেছে। একই সাথে নানা ধরনের সবজির চাষাবাদ করে চাষিরা হচ্ছে লাভবান। ধীরে ধীরে গোটা উপজেলা এখন লবণ পানির চাষাবাদ মুক্ত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্ষা মৌসুমে বসতভিটে এবং ঘেরের আইল সীমানার বেড়ীবাঁধের উপর শুরু হয় মাচান পদ্ধতিতে অসময়ের তরমুজ ও নানা ধরনের সবজি চাষ। অনেকে আবার একই জায়গায় ধান, তরমুজ, সবজির পাশাপাশি মাছ চাষ করছে। যেটাকে বলা হচ্ছে সমন্বিত চাষাবাদ। অনেক শিক্ষিত বেকার তরুণ যুবক নতুন নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে এ পেশায় ঝুঁকছেন। উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের লক্ষিখোলা গ্রামের নতুন উদ্যোক্তা শেখ বায়েজিদ হোসেন এ বছর শুরু করেছেন সমন্বিত চাষাবাদ। নিজের ২০০ শতক জমির চারিপাশে আইল সীমানার বেড়িবাঁধে মাচান পদ্ধতিতে করেছেন অসময়ের তরমুজ ও সবজি চাষ। জানা গেছে, তিনি ১ হাজার তরমুজ বীজের গাছ থেকে ২ হাজার পিচ তরমুজ পাবেন। প্রতিটি তরমুজ ৪ কেজি থেকে শুরু করে ৯ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর দাকোপে মাচান পদ্ধতিতে যেখানে তরমুজ চাষ হয়েছিল ১৬ হেক্টর জমিতে এ বছর সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হেক্টরে। একই ভাবে ২২০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের বিপরীতে এ বছর চাষাবাদ হয়েছে ২৭০ হেক্টর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম আশার কথা তুলে ধরে বলেন, "প্রতি বছর নতুন নতুন এলাকা চাষাবাদের আওতায় আসছে। প্রচুর লবণাক্ত এলাকা খ্যাত গড়খালী, নলডাঙ্গা ও আঁধার মানিকে এ বছর মাচান পদ্ধতির এই সমন্বিত চাষাবাদ শুরু হয়েছে।" তবে চাষিদের অভিযোগ অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে উৎপাদন খরচ যেমন বেড়ে যায়, তেমনি পাইকারি ক্রেতা মাঠে না আসায় তারা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস